পিরামিডের মধ্যে পিরামিড, ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে কোন অজানা রহস্য | Mysterious | Islamic Knowladge
ইতিহাসের যে স্থাপত্যগুলো আদি অনন্তকাল ধরে মানুষকে বিস্মিত করেছে তার মধ্যে প্রথম দিকেই নাম থাকবে মিশরের পিরামিডের।
গিজার পিরামিড হোক বা মানুষের মাথা এবং সিংহের শরীর সম্বলিত স্ফিংস, এর বিরাটত্ব এবং বৈচিত্র্য বারবার মানুষের পর্যটনপ্রিয় মনকে ধাবিত করেছে মিশরের দিকে।
পিরামিড মানেই আশ্চর্য, পিরামিড মানেই রহস্য এবং নানা বিচিত্র কাহিনি। আর কে না জানে, মানুষের মন চিরকাল রহস্যের দিকেই ছুটে গিয়েছে।
যে কারণে মিশরের পিরামিডের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আজও রয়েছে আটুট।
পিরামিড মানেই থরে থরে রহস্য। পিরামিড মানেই তার পরতে পরতে চমক। পিরামিডের মধ্যে থাকা মিশরীয় রাজাদের মমি, তাদের ব্যবহৃত পোশাক, ধনরত্ন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনসপত্র সবমিলিয়ে পিরামিড এক অপার রহস্যের ভান্ডার।
আর সেই সঙ্গে হাজার হাজার বছরের অজানা ইতিহাসের হাতছানি। সব মিলিয়ে পিরামিড মানেই তাকে ঘিরে রয়েছে মানুষের অপরিসীম কৌতুহল
তবে এই দু একটি পিরামিড ছাড়াও মিশরের আঁকেবাঁকে এমন অনেক পিরামিড দেখা যায় যেগুলি অতটা জনপ্রিয় না হলেও বৈচিত্র্য কিছু কম নয়।
তার মধ্যে অন্যতম কুকুলচান বা এল ক্যাসিলো। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন যে এই পিরামিডের এমনই গঠন যে এর ভিতরের দেওয়ালগুলি দিয়ে নির্মিত হয়েছে আরেকটি পিরামিড।
আবার তার ভেতরের দেওয়াল দিয়ে তৈরী হয়েছে আরও একটি পিরামিড।
পিরামিডের ভিতর যেখানে মমি রাখা হয় সেই স্থান স্বাভাবিক ভাবেই খুব একটা সুগম হয় না। এক্ষেত্রে পিরামিডের এই ত্রিস্তরীয় গঠন প্রণালী গবেষকদের জন্য আরোই দুর্ভেদ্য করে তুলেছে।ফলে এর ভিতরে ঢোকা আপাতত দুঃসাধ্য বলেই মনে করছেন গবেষকরা।
তবে এই ত্রিস্তরীয় বেড়াজাল টপকে একবার যদি এই পিরামিডের কেন্দ্রে পৌঁছোতে পারেন তবে ইতিহাসের বহু নিদর্শন খুঁজে পাবেন এমনটাই আশা করছেন গবেষকরা।
গবেষকরা তাদের ত্রিস্তরীয় বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এল ক্যাস্টিলোর এই গঠন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন।
এই প্রযুক্তির নাম সংক্ষেপে ERT-3D। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এর আগে এল ক্যাসিলোর তলায় মৃতদেহের ব্যবহারের জন্য ভুমধ্যসাগরের প্রবাহের সন্ধান দেন গবেষকরা।
স্থাপত্যের বাইরে ৯৬টি ইলেকট্রোড বসিয়ে তবেই প্রত্নতাত্ত্বিকরা পিরামিডের এই ত্রিস্তরীয় বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ পেয়েছেন। এর দ্বারাই ডিজিটাল মানচিত্র তৈরী করতেও সক্ষম হন গবেষকরা।
তাঁরা যদিও পিরামিডের ভিতর আরেকটি পিরামিডের অস্তিত্বের কথা আগেই জানতেন। তবে তিন নম্বর পিরামিডের অস্তিত্ব তাদের অবাক করে দেয়।
পিরামিডের কাঠামোটির ভেতর একটি সিঁড়ি এবং একটি বেদী আছে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করে থাকেন।
আশা করা হচ্ছে এই সিঁড়ি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারলেই অতীত মিশরীয় সংস্কৃতির আরো নানা অজানা দিক আমাদের সামনে আবিষ্কৃত হবে।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জেফ্রি ব্রাসওয়েল উল্লেখ করেছেন যে ১৯৪০ সালে এই পিরামিডের দ্বিতীয় কাঠামোর সন্ধান পাওয়া গেছিলো।
কিন্তু সেই সময়ের পরিকাঠামোর জন্যই খননকার্য চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ঠিক সেই কারণেই “রাশিয়ান নেস্টিং ডল” এর বিষয়টিও এখনো রহস্য।
তার কারণ বেশি খননকার্যের ফলে অনেক সময়ে সেই অঞ্চলে ক্ষতি হতে পারে। তবে এখন যা পরিকাঠামো তাতে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে এই পিরামিডের মধ্যে প্রবেশ করা যাবে।
এবং ভালো করে নিজের চোখে জায়গাটি পরীক্ষা করে তবেই গবেষকরা ইতিহাসের নতুন দিগন্তের সন্ধান দিতে পারবেন।
No comments